তুই আমাকে চিনবি তো?
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০১৬, ০০:১৬ (প্রথম আলো ছুটির দিনে প্রকাশিত:
স্কুলজীবনে শুধু শক্তিই ছিল আমার বন্ধু। ওর ভালো নাম মেহেদি হাসান। ডাকনাম শক্তি। আমার সমবয়সী ছিল ও। বেশ নাদুসনুদুস দেখতে আর শান্ত প্রকৃতির। আমরা সব সময় এক বেঞ্চে বসতাম। আমি সুন্দর ছবি আঁকতাম। ও আমাকে উৎসাহ দিত। বলত, আমি নাকি বড় হয়ে শিল্পী হব। কিন্তু হঠাৎ করে আমি যেন কেমন হয়ে যাই, ধীরে ধীরে আমার পড়াশোনার মান খারাপ হতে থাকে। পড়তে একদম মন চায় না। আমি পড়াশোনায় ওর চেয়ে অনেক পিছিয়ে যাই। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। আমি হারিয়ে ফেলি আমার সেই বন্ধুটিকেও।
দেখতে দেখতে অনেকটা বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যেই হঠাৎ করে আমার সেই প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে দেখা। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। সে-ও আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। ও কি আমাকে চিনতে পেরেছে? কিন্তু আমি ওকে ঠিক চিনতে পেরেছি। কত বড় হয়ে গেছে! মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। চোখে চশমা। হাতে বই-খাতা, সম্ভবত কলেজে পড়ে। আমার যে কী খুশি লাগছিল। ইচ্ছে করছিল দৌড়ে গিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে বলি, বন্ধু, তুই কেমন আছিস? কিন্তু সাহস পাচ্ছিলাম না, কারণ আমি তো জীবনে হেরে যাওয়া একটা ঝরে পড়া ফুল। আর ও তো জীবনে সফল হয়েছে, ওর চলাফেরা তো এখন শিক্ষিত লোকদের সঙ্গে। ওর আর আমার পৃথিবী তো আলাদা। ওর কি মনে আছে আমাদের সেই বন্ধুত্বের কথা, ও কি মেনে নেবে এই মূর্খ বন্ধুটাকে? ও সত্যি সত্যি আমাকে চিনতে পারল না। খুব কষ্ট লাগল। বন্ধু, তুই কি আমাকে সত্যি চিনতে পারিসনি? নাকি চিনেও না চেনার ভান করে ছিলি? যা-ই হোক, বন্ধুত্বের দাবি নিয়ে তোকে আর ছোট করব না। তুই ভালো থাকিস।
রিপন শেখ
শিলন্দা, শিয়ালকোল, সিরাজগঞ্জ।
nace Vaiy. or sathe kotha bolenni?
ReplyDelete